মন জুড়ানো উতল হাওয়া, ঢেউয়ের ছলাক ছলাক ধ্বনি, লঞ্চয়ের হুইসেল…..হ্যা ঠিকই ধরেছেন, আমি কোনো এক নদীর কথাই বলছি, সেটা হলো আমার প্রণের কীর্তনখোলা নদী যার তীরে আমাদের বরিশাল শহর গড়ে উঠেছে। এই নদীর সাথে জড়িয়ে আছে বহু ইতিহাস। কীর্তনখোলার নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানান মতামত।অনেকের মতে এই নদীর তীরে কীর্তন করা হতো বলে এর নাম দেয়া হয় কীতর্নখোলা।আবার অনেকে মনে করে এই নদীর তীরে কীর্তনদের বসবাস ছিলো বলেই নদীর নাম রাখা হয় কীতর্নখোলা। তবে বিভিন্ন মতামত থেকে বোঝা যায় কীর্তনখোলার সাথে কীর্তনিদের একটি সংযোগ ছিলো। কীর্তনখোলা মূলত আরিয়াল খাঁ নদের একটি শাখা। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৬০ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৪৯৭ মিটার।
কীর্তনখোলা যেমন বরিশালকে অপরূপ প্রাকৃতিক রূপে সাজিয়ে তোলে ঠিক তেমনি বরিশালের অর্থনীতিতেও রয়েছে এর বিশাল অবদান। সন্ধ্যায় কীর্তনখোলার বুকে আলোকসজ্জায় সেজে ওঠে বড় বড় লঞ্চ গুলো।নদীর তীর ঘেষে গড়ে উঠেছে বহু পর্যটন স্থান যা দৃষ্টি কাড়ে ভ্রমন প্রিয় মানুষের। তবে সময়ের সাথে সাথে আমাদের কীর্তনখোলা নানা ভাবে দুষিত হয়ে যাচ্ছে। ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে দেখা যায়, নগরের বিভিন্ন খাল-বিলে ফেলা বর্জ গিয়ে মিসছে এই নদীতে।এর পাশাপাশি কীর্তনখোলায় ফেলা হয় প্লাস্টিক সহ নানা বর্জ।জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেও নদীটির মিষ্টি পানি লবনাক্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদেই দায়িত্ব আমাদের প্রাণের কীর্তনখোলাকে সংরক্ষণ করা।
বরিশালের নগরবাসীর কাছে যেন কীর্তনখোলা নদীর তীর এক শান্তির জায়গা। এই নদীকে কেন্দ্র করে এর তীরে গড়ে উঠেছে বরিশাল নৌ-বন্দর,যা বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম নদী বন্দর। কীর্তনখোলা ধান, নদী, খালের বরিশালের সৌন্দর্যকে আরো সমৃদ্ধ করে। কীর্তনখোলার তীরের শীতল বাতাস,জলের ছলাক ছলাক ধ্বনি, পাখিদের কুহুতান সব মিলিয়ে মনে এক অন্য রকমের উল্লাস জাগায়।