আদনান ইমন
“পটুয়াখালীর শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ ও মানবিক সমাজ গড়ে তোলার অঙ্গীকার”—এই স্লোগানকে সামনে রেখে ডিবুয়াপুর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যাতিক্রমধর্মী অভিভাবক সমাবেশ। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এবং লাল সবুজ সোসাইটির আয়োজনে আয়োজিত এই সমাবেশে অভিভাবক, শিক্ষক ও সরকারি কর্মকর্তারা শিশুদের অধিকার, নিরাপত্তা ও মানসিক বিকাশ নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন।
২৬ মে, মঙ্গলবার ২০২৫—সকাল সাড়ে দশটায় ডিবুয়াপুর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক ব্যাতিক্রমধর্মী অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানের শুরুতে SAFE প্রকল্পের পটুয়াখালী জেলার প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ ইস্রাফিল তিনি শিশুদের সুরক্ষায় তরুণ ও মায়েদের সচেতনতামূলক দিক গুলো তুলে ধরেন।
শিশুদের অধিকার ও সুরক্ষার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আয়োজিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: মুজিবুর রহমান তিনি বলেন, “শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশে বিদ্যালয়ের পাশাপাশি পরিবারকেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। শিশুশ্রম বন্ধের জন্য তরুনদের এগিয়ে আসার আহবান যানান। তিনি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান লাল সবুজ সোসাইটি ও SAFE প্রকল্পকে এইরকম কার্যক্রম করার জন্য।আমরা শুধু পাঠদান করেই দায় শেষ করতে পারি না; শিশুর সার্বিক নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষা সবার দায়িত্ব।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ,সদর পটুয়াখালি ,আবু সুফিয়ান ইমরান ‘উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা দপ্তরের প্রতিনিধি, মহিলা অধিদপ্তরের প্রজেক্ট পরিচালক, শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ নগর মাতৃসনদ কেন্দ্রের ডা: কাজী জেবা আফিয়া, এবং মকিম আলী খাঁ, সহকারী অধ্যাপক, পটুয়াখালী কৃষি ইনস্টিটিউট।
ডা: কাজী জেবা আফিয়া বলেন, “আজকের শিশুরাই আগামীর নেতৃত্ব। পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা ও মানসিক সুরক্ষা ছাড়া কোনো শিশুর পূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। পরিবারকে হতে হবে সচেতন, সহনশীল ও সহায়ক।”
পটুয়াখালী কৃষি ইনস্টিটিউট এর অধ্যাপক মকিম আলী খাঁ তাঁর বক্তব্যে বলেন, “প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহার ও নৈতিক শিক্ষাই শিশুর সুস্থ ভবিষ্যৎ গঠনের মূল ভিত্তি। এ ধরনের আয়োজন শিশুদের মানবিক গুণাবলির বিকাশে সহায়ক।”
শিশু সুরক্ষায় সমাজকর্মী ,আইরিন সুলতানা বলেন ; শিশু সুরক্ষার হেল্পলাইন নাম্বার ১০৯৮ ও শিশু সুরক্ষা আইন সম্পর্কে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যানানোর আহবান করেন।
দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এবং শিশুদের ভবিষ্যতের সঙ্গে প্রকৃতির বন্ধন গড়ে তোলার প্রতীকী উদ্যোগ হিসেবে, অনুষ্ঠান শেষে একটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অতিথি, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন, যা দিনটিকে আরও অর্থবহ ও স্মরণীয় করে তোলে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এমন সচেতনতামূলক কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে—যেখানে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসন একযোগে কাজ করে একটি শিশুবান্ধব সমাজ গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।