
পরিবেশ বিধ্বংসী প্রকল্পগুলোর তালিকা তৈরি করে জনসম্মুখে প্রকাশ করা জরুরি। তাছাড়া পরিবেশ রক্ষায় রাজনৈতিক সদিচ্ছারও প্রয়োজন।
রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘নদী, হাওর, বন, কৃষিজমি ও পাহাড়: পরিবেশ সুরক্ষায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারের আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এএলআরডি।
এএলআরডির চেয়ারপারসন ও মানবাধিকার কর্মী খুশী কবিরের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা। প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রিভারাইন পিপলের সাধারণ সম্পাদক শেখ রোকন, বিআইআইএসএস’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. সুফিয়া খানম, বারসিকের পরিচালক পাভেল পার্থ এবং বেলার প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম।
মূল প্রবন্ধে এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, সাভারের হেমায়েতপুরে ট্যানারি শিল্প স্থানান্তর করে বলা হয়েছিল যে ধলেশ্বরী আর দূষিত হবে না, কিন্তু বাস্তবতা হলো, এখন ধলেশ্বরী আরও ভয়াবহ দূষণের শিকার। এর বিরুদ্ধে সংসদীয় কমিটিতে বারবার প্রস্তাব দেওয়া হলেও সুরক্ষা কার্যক্রম কার্যকর হয়নি।
বক্তারা বলেন, উন্নয়নের নামে পরিবেশ ধ্বংসকারী সরকারি ও বেসরকারি প্রকল্পগুলোর তালিকা তৈরি করে তা উন্মুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। পরিবেশ সুরক্ষায় জনসচেতনতা, আইনি পদক্ষেপ ও আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এসব মন্ত্রণালয় অধিদপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয় করা জরুরি।
হাওর প্রসঙ্গে শামসুল হুদা বলেন, হাওরের প্রতিবেশগত সংকট নিরসনে প্রকৃতপক্ষে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ জরুরি। রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন বলেন, নদী, পাহাড়, বন ও হাওড়ের বিপর্যয় যেন একটি দুষ্টচক্রে পরিণত হয়েছে। নদী কমিশনের কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন।
বিআইআইএসএসর রিসার্চ ফেলো ড. সুফিয়া খানম বলেন, বাংলাদেশের নদীগুলো ভয়াবহভাবে প্লাস্টিক ও রাসায়নিক দূষণে বিপর্যস্ত। বারসিকের পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, রাষ্ট্রকে উন্নয়ন বনাম পরিবেশ এই বাইনারি থেকে বেরিয়ে এসে ইকো সেন্সিটিভ উন্নয়ন কৌশল গ্রহণ করতে হবে।
বেলার প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম বলেন, আইন ও কমিশন থাকা সত্তে¡ও পরিবেশ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮০ দেশের মধ্যে ১৭৭তম। এটা শুধু লজ্জার নয়, ভয়াবহ ভবিষ্যতের ইঙ্গিত।
সভাপতির বক্তৃতায় খুশী কবির বলেন, উন্নয়নের নামে পরিবেশ ধ্বংস মুনাফালোভী ও অপরিকল্পিত দৃষ্টিভঙ্গির ফল। আমরা যে উন্নয়ন চাই তা যেন ধ্বংস ডেকে না আনে। এছাড়াও সেমিনারে রাজশাহী, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, সাতক্ষীরা জেলা থেকে আগত প্রতিনিধিদের মধ্যে কাশমির রেজা, ড. হালিম দাদ খান, ইবনুল সাঈদ রানা, আফজাল হোসেন, জিয়াউর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।