সামাজিক মাধ্যমে নতুন একটি শারীরিক অনুশীলন দেখা যাচ্ছে, যা কি না দেহের প্রদাহ কমাতে সহায়ক বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা জানান, এটি কোনো স্বীকৃত চিকিৎসা নয়। মূলত, এটি এমন কিছু শারীরিক অনুশীলন বা কার্যকলাপকে বোঝায়, যা শরীরের লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমকে সক্রিয় করে তোলে। দিল্লির সি কে বিরলা হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা বিভাগের পরিচালক ডা. মনীষা অরোরা জানান, লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ ও বিপাকীয় (মেটাবলিজম) স্বাস্থ্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
এই সিস্টেম ঠিকভাবে কাজ করলে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করতে পারে।
লিম্ফিং একটি হালকা ব্যায়াম বা নড়াচড়া, যেখানে লাফানো, ট্র্যাম্পোলিনে ব্যায়াম করা বা হালকা মালিশ করা হয়। এর ফলে শরীর তরলের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। এই তরল শরীর থেকে বর্জ্য ও টক্সিন দূর করে শরীর পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।এমনটাই মনে করেন মুম্বাইয়ের গ্লেনইগলস হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরামর্শদাতা ডা.মঞ্জুষা আগরওয়াল।
ডা. অরোরা বলেন, লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম শুধু গলা বা বগলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি সারা শরীরে বিস্তৃত। এতে টনসিল, প্লীহা, অস্থিমজ্জা প্রভৃতি অঙ্গও অন্তর্ভুক্ত।
গবেষণা বলছে, লিম্ফ সিস্টেম সক্রিয় থাকলে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ে এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ কমে।এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।
লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম ভালো রাখতে যা করবেন:
- নিয়মিত শরীরচর্চা
- পরিমিত পানি পান
- পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
যদিও ‘লিম্ফিং’ চিকিৎসা পরিভাষা হিসেবে স্বীকৃত নয়, তবে এর অন্তর্ভুক্ত শারীরিক ব্যায়ামগুলো শরীরের জন্য উপকারী। ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাঁটাও একটি চমৎকার উপায় হতে পারে।
তবে ডা. মঞ্জুষা আগরওয়াল বলেন, হাঁটা এখনো সবচেয়ে কার্যকর ও সহজলভ্য অনুশীলন হিসেবে বিবেচিত হয়। বিশেষ করে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে।লিম্ফিং কিছু উপকার করতে পারে বটে, তবে এর ওপর এখনো পর্যাপ্ত গবেষণা হয়নি।
সবচেয়ে ভালো ফল পেতে হলে হাঁটার সঙ্গে অন্যান্য অনুশীলন মিলিয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ রুটিন তৈরি করাই ভালো। এর ফলে দেহের বিপাক, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ—
সবই ভালো থাকবে।
সূত্র: কালের কন্ঠ