আমি রুমা রায় মনা। আমি ছোট বেলা থেকে স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করি। কাজেই বড় হওয়ার পরে যখন জানতে পারলাম আমার বসবাসরত এরিয়াতেই একটি সংগঠন নিয়মিত স্বপ্ন দেখে এবং অন্যদের স্বপ্ন দেখায় তখন আমি নতুন করে স্বপ্ন দেখার লোভ সামলাতে পারি।
শুরুতে আমি অন্য একটি সংগঠনে যোগ দিয়েছিলাম কিন্তু কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পরে অনুভব করলাম, আমি যে ধরনের কাজ করতে ভালোবাসি সেগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তাদের পরিকল্পনা শূন্য। তখন থেকেই আমি খোঁজ করা শুরু করলাম এমন একটি সংগঠনের যেটি কিনা একের ভিতর অনেক। তখন আমার এক ফেসবুক বন্ধুর কাছে শুনলাম লাল সবুজ সোসাইটির প্রশংসা । একদিন আগ্রহ নিয়েই ফেসবুকের সার্চ অপশনে তাদের নাম লিখে সারচ করি এবং পেয়েও যাই। অতঃপর তাদের অফিসিয়াল সকল রুলস পালনের মাধ্যমে ‘লার্ন টু লিড’ নামক একটি ট্রেনিং এ অংশগ্রহণ করি। ঠিক এখান থেকেই আমি নতুন এক ‘রুমা রায় মনা’ কে চিনতে শুরু করি যেই মনা সব সময় জেনে এবং মেনে এসেছে যে, কোন কজেই দ নয়, তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল নয়, তাকে দিয়ে সফলতা সম্ভব নয়। এমন হাজারো অসম্ভাবনার ভয়ে থাকা মেয়েটিকে হঠাৎ ২০২২ সালের লাল সবুজ সোসাইটির ‘লার্ন টু লিড’ নমক ট্রেনি এ বলা হয়, ‘আরে তুমি তো খুব সুন্দর করে কথা বলো, সহজেই মানুষের সাথে মিশে যেতে পারো। তুমি তো খুব এক্টিভ। এভাবে নিজের এক্টিভিটি ধরে রাখো ভবিষ্যত উজ্জ্বল হবে।” এরপরে আমাকে আর কে আটকায়? সেখান থেকেই লাল সবুজ সোসাইটি পরিবারের সঙ্গে নতুন এক আমি এর পথযাত্রা শুরু।
লাল সবুজ সোসাইটিতে যোগদানের পর কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাই। তখন প্রথম আমি জানতে পারি যে চাইলে একটি টিমকে সামা দেওয়াও আার পক্ষে সম্ভব।
উপরেই বলেছি যে, আমি এমন একটি সংগঠনের খোঁজ করছিলাম যেটি কিনা মানুষকে নিয়ে ভাবে এবং যে মানুষ গুলো অসহায় মানুষের কথা ভাবে তাদের নিয়েও ভাবে। বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে তাই তো! আমি সহজ করে বলছি, অসহায় মানুষদের নিয়ে চিন্তা করি বলেই বর্তমানে আমাদের নামের পাশে ‘স্বেচ্ছাসেবী’ নামটি যুক্ত হয়েছে। তবে আমাদের নিয়ে ভাবার জন্য পরিবার ব্যতীত অন্যান্য মানুষের সংখ্যা নিতা্তই কম। কিনতু লাল সবুজ সোসাইটি তাদের প্রত্যেক সদস্যকে নিয়ে আলাদা ভাবে চিন্তা করে, আলাদা ভাবে প্রতিটি সদস্যের যত্ন নেয়। কাজেই একবার লাল সবুজ সোসাইটিকে পছন্দ করলে এরপরে আর অপছন্দের সুযোগ নেই।
ছোট বেলা থেকে একা বড় হওয়ার কারনে আমার পরিচিত লোক ছিলো হাতে গোনা গুটিকয়েক। কথা বলার বা চলার সঙ্গী ও ছিলো না বললেই চলে। কিন্তু লাল সবুজ সোসাইটিতে যোগদানের মাধ্যমে আমি একটি বড় পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ হওযার সুযোগ পেয়েছি। যে পরিবারটি আমার ব্যাপারে সচেতন ও যত্নশীল। তাই সর্বদা লাল সবুজ নামক পরিবারটি আমাকে টানে। আর এই পরিবারের সদস্য হতে পেরে আমি নিঃসন্দেহে গর্বিত। আমি এমন একটি সংগঠনে আছে জেনে অনেকে মজা করেছে, আবার অনুপ্রেরণাও জুগিয়েছে কেউ কেউ। এক্ষেত্রে আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষাগুরুরা বেশি অনুপ্রাণিত রেছেন আমা
বে ত এতো ালো কাজ ও ভালো মানুষের মধ্যে থেকেও কারন ছাড়াই প্রয়ই মন খারাপ হয় আমর, বিরতি নিতে ইচ্ছে করে ব্যস্ততম জীবন থেকে। কিন্তু বিরতি নেওয়ার পরে স্থিরময় জীবন ও ভালো লাগে না। এক কথায় যখন কিছুই ভালো লাগে না তখন আমি ঘুরতে যেতে পছন্দ করি এবং সুন্দর সুন্দর ছবি ও ভিডিও করতে পছন্দ করি। আর ঘুরতে যাওয়ার অপশন না থাকলে বাসায় বসে বসে কন্টেন্ট লিখি। কিন্তু এই ছোট ছোট কাজ গুলোর মাধ্যমে যখন আমি লাল সবুজ সোসাইটির সদস্যদের কাছ থেকে বড় বড় প্রশংসা পাই তখনকার অনুভুতি ভাষায় প্রকাশ করতে আমি বরাবরই ব্যর্থ।
স্বেচ্ছাসেবকতা আমাকে অন্যদের চেয়ে আলাদা হতে সাহায্য করেছে, করেছে অনন্য ও অতুলনীয়। আমি এখন বিশ্বাস করি যে, চাইলেই আমাকে দিয়ে কিছু সম্ভব। কারন আমার বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে আমি ভালো লিখালিখি করতে জানি, গুছিয়ে কথা বলতে পারি এবং ভয় ছাড়াই যেকোন কাজ জয় করে আসার সাহস রাখি।
বর্তমানে আমি লাল সবুজ সোসাইটির একজন ভলেন্টিয়ার হওয়ার পাশাপাশি লেখালেখিরও চে্টা করে যাচ্ছি নিয়মিতভাবে। এছাড়াও লাল সবুজ সোসাইটিতে পূর্বে বিভিন্ন প্রজেক্টে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেছি এবং এখনো করে যাচ্ছি। আর এই কাজ গুলো করতে গিয়ে একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের কষ্টগুলো শুনতে পারার অভিজ্ঞতা হয়েছে অসংখ্যবার, বহুবার তাদের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছি। কাজেই এটি আমার জন্য অনেক বড় একটি পাওয়া যে একজন অসহায় মানুষ কাউকে না পেয়ে তার বিশ্বাস ও ভরসার স্থান থেকে তার কষ্ট গুলো আমার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে পারছেন। আর এ সবকিছুর জন্য আমি যতবারই লাল সবুজ সোসাইটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো ততবারই কম হবে বলে আমি মনে করি এবং এটা না বললেই নয় যে এখানে এসে আমি অনেক ভালো মন মানসিকতার ছোট বড় বন্ধুও পেয়েছি। একটি বড় নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে আমার।