/
/
/
নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত
নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত
ByMozammel Haque Hridoy
Published২৭ নভেম্বর, ২০২৫
২:৪৬ অপরাহ্ণ
1762172769579
Mozammel Haque Hridoy
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে লাল সবুজ প্রকাশের সাব-এডিটর হিসেবে কর্মরত। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন সিজে ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা, সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও ‘Northify’ এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের বেরোবি প্রতিনিধি ছিলেন।

কনটেন্টটি শেয়ার করো

Copied!

সর্বশেষ

mjf

‘নারী ও কন্যাশিশুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল সহিংসতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ হই’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হলো ‘চ্যালেঞ্জিং স্যোশাল নর্মস এন্ড পাওয়ার ডায়নামিক্স: টুওয়ার্ডস ফেয়ার ফ্রি ফিউচার’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ।

গতকাল বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ এ জাতীয় সংলাপের আয়োজন করে। বিশ্বজুড়ে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা রোধে ১৬ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ-২০২৫ এর অংশ হিসেবে ইউএন উইমেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, প্লান ইন্টারন্যাশনাল, সুইডেন ও কানাডা দূতাবাসের সহযোগিতায় এ আয়োজন করে সংস্থাটি।
এ সংলাপে নীতিনির্ধারক, উন্নয়ন সহযোগী, সাংবাদিক, নাগরিক সমাজ প্রতিনিধি ও তরুণেরা অংশগ্রহণ করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, জুলাইয়ে এত বড় আন্দোলনে ৭০ শতাংশ ছিল নারী, ৬০ শতাংশ ছিল মাদ্রাসার ছেলে মেয়েরা। তারা পরে কোথায় হারিয়ে গেলো, কেন গেলো?
নারীর ক্ষমতায়নের যে ন্যারেটিভ দাঁড় করানো হচ্ছে তার বিকল্প ন্যারেটিভ দাঁড় করাতে হবে।’’
তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো কেন আলাদা নারী শাখা রাখবে? নারীরা মূলধারার রাজনীতিতে সমানভাবে কাজ করতে পারে এটি স্বীকার করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। নির্বাচনের আগে জানতে হবে নারীর অধিকার, নিরাপত্তা ও সমতা বিষয়ে তাদের অবস্থান কী। কাঠামোগত রূপান্তর ছাড়া কোনো বড় পরিবর্তন সম্ভব নয়।
নারী, শিশুর উপর সহিংসতা ঘটলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রতিক্রিয়া জানানোর বিষয়ে উদ্যোগের কথাও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানের শুরু ও মূল প্রবন্ধে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম এ বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবরের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, নারী মৃত্যুর ঘটনা ৫০৩টি, প্রায় ২০০ নারী স্বামীর নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করেছে, ৫০ এর বেশি খুন ও ১৪০ এর বেশি আত্মহত্যা, শিশুর প্রতি ৯০৫ টি যৌন সহিংসতা এবং প্রায় ৭৮ শতাংশ নারী ডিজিটাল সহিংসতার শিকার।

পরে অনুষ্ঠানে গল্পের মাধ্যমে সমাজের চিত্র উপস্থাপন করেন বটতলা থিয়েটার। তারা মনে করেন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কালচারাল মুভমেন্টও জরুরি।
পরে প্যানেল ডিসকাশনে আলোচনা করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ও নাগরিক প্লাটফর্ম ফর এসডিজি, বাংলাদেশের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট অফিস এন্ড পোভার্টি ডিভিশন, ইউএনডিপি নিউইয়র্কের সাবেক পরিচালক ড. সেলিম জাহান ও বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নারীরা পরিবার, সমাজ, প্রশাসন কোথাও নিরাপত্তা পাচ্ছেন না। মফস্বলে নারীরা বেশি সহিংসতার শিকার হন। আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না ঐসব নারী কীভাবে একটি নিরাপদ জায়গা খোজেন, যেখানে তারা এসে কথাগুলো বলতে পারবেন।
তিনি বলেন, দেশের ভেতরে অর্থনৈতিক, সামাজিক বৈষম্য বেড়ে গেছে। দারিদ্রের যে প্রক্রিয়া এবং এই মূহুর্তে বিনিয়োগ না থাকা, যুব সমাজের কর্মসংস্থান না থাকায় নারীরা অনেক বেশি নিপীড়িত হচ্ছে আর্থিক দিক থেকে।’’ তিনি এ বিষয়গুলো নিরসনে বেশ কিছু সমাধানের প্রক্রিয়ার কথাও উল্লেখ করেন।

পরে আলোচনা করেন সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলি, সুইডেন দূতাবাসের হেড অফ মিশন ইভা শ্মেডবার্গ, ইউএন উইমেন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ গিতাঞ্জলী সিং, কানাডা হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি লরেন্ট ব্রাসার্ড ও ব্রিটিশ হাইকমিশন ঢাকার ডেপুটি ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর মার্টিন ডাউসন। এসময়ে অনেক উন্নয়ন সহযোগী, সাংবাদিকরা তাদের মতামত তুলে ধরেন৷
আলোচনায় রেতো রেংগলি বলেন, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে সবার একসাথে কাজ করা জরুরি, অংশীদারত্ব ও সমষ্টিগত পদক্ষেপ এটি প্রতিরোধ করতে পারে।

পুরো আয়োজনটি সঞ্চালনা করেন ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’র নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম।