

বাংলাদেশ এক প্রাচীন সভ্যতার পাদপীঠ। গ্রিক ঐতিহাসিকদের বিবরণী মোতাবেক প্রাচীন বাংলায় শক্তিশালী গঙ্গাহৃদি রাষ্ট্রের বিকশিত হওয়া, পুণ্ড্রনগরীর সভ্যতা, ওয়ারী বটেশ্বর থেকে প্রাপ্ত প্রত্নসামগ্রী, ঢাকা কেন্দ্রীয় জাদুঘর, বরেন্দ্র জাদুঘর, কলকাতা জাদুঘর, বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রাপ্ত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত পাণ্ডুলিপি, শিলালিপি, মূর্তি, মুদ্রা এবং অন্যান্য প্রত্নসামগ্রী থেকে প্রতীয়মান হয় প্রাচীন বাংলায় অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও উন্নত সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল।
প্রাচীনকালে বাংলা ও বাংলায় স্বাধীন রাষ্ট্রের বিকাশ: ‘ঐতরেয় আরণ্যক’ গ্রন্থে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের উল্লেখ পাওয়া যায়। এটা থেকে আরও জানা যায়, প্রাচীন বাংলায় সে সময় বঙ্গ, মগধ এবং চের নামক তিনটি দেশ ছিল। তা ছাড়া মহাভারত, রামায়ণ, বিভিন্ন পুরাণসহ আরও অনেক পুরাতন গ্রন্থে বঙ্গ দেশের উল্লেখ দেখতে পাওয়া যায়। অবশ্য প্রাচীনকালে সমগ্র বাংলাদেশ একক কোনো রাষ্ট্রের শাসনাধীন ছিল না। তখন বঙ্গ বা বঙ্গাল বলতে যে অঞ্চল বুঝাত তা বর্তমান বাংলার একটি অংশ মাত্র। সে সময় বাংলাদেশ নানা পরগণা বা জনপদে বিভক্ত ছিল এবং বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল। সে জনপদগুলো হলো গৌড়, বঙ্গ, সমতট, হরিকেল, পুণ্ড্র, বরেন্দ্র, উত্তররাঢ়, দক্ষিণ রাঢ়, তাম্রলিপি, চন্দ্রদ্বীপ ও বাংলা। সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের মতে ‘এক একটি কোমের মানুষ লইয়া এক একটি জনপদ গড়ে উঠেছিল।’ মহাভারতে প্রাচীন বাংলার অনেকগুলো কোমের উল্লেখ পাওয়া যায়। আবার কোনো কোনো ঐতিহাসিকের বর্ণনা থেকে প্রাচীনকালে বাংলায় সু-সংগঠিত রাষ্ট্রের কথাও জানা যায়। খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতকে গ্রিক ইতিহাস থেকে প্রাচীন বাংলায় সুগঠিত ও শক্তিশালী গঙ্গাহৃদি রাষ্ট্রের বর্ণনা পাওয়া যায়। প্রাচীন বাংলার গঙ্গাহৃদি রাষ্ট্রের শক্তিশালী হস্তিবাহিনী এবং পরিকল্পিত ও সুনিপুণ সেনাবিন্যাসের তথ্য পাওয়া যায়। গ্রিক ঐতিহাসিকদের বর্ণনা থেকে আরও জানা যায়, গঙ্গাহৃদি রাষ্ট্রের শক্তিশালী সামরিক বাহিনী কর্তৃক সম্ভাব্য আক্রমণের আশঙ্কায় আলেকজান্ডার ভারত থেকে তার সৈন্য ফিরিয়ে নিয়ে যান। ওই সময় গঙ্গাহৃদি রাষ্ট্রের বাহিরে বাংলার অন্যান্য অংশেও রাজ্য ও রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ছিল।
খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে রচিত কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে বাংলার উল্লেখ পাওয়া যায় এবং সে সময়ের বাংলার উন্নত বস্ত্রশিল্পের কথা জানা যায়। মহাভারত ও সিংহলী পুরাণ থেকে জানা যায়, বাংলার প্রাচীন রাজ্যগুলোতেও রাষ্ট্রীয় সচেতনতা ছিল, রাষ্ট্রীয় কাঠামো ছিল এবং রাজ্যগুলোর কৃষি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, আইনশৃঙ্খলা, যুদ্ধবিগ্রহ, পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোর সঙ্গে সমঝোতা, সন্ধি প্রভৃতি সম্পর্কিত সুস্পষ্ট নীতি, কৌশল ও প্রশাসনব্যবস্থা ছিল। ঐতিহাসিকদের মতে, আর্যদের আগমনের পূর্বে বাংলায় আনার্য জাতির লোকেরা সভ্যতা গড়ে তুলেছিলেন। ঐ সব জাতির মধ্যে নিষাদ, কিরাত ও দামিল জাতির নাম উল্লেখযোগ্য। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে আর্যদের আসার পূর্বে বাংলায় এক সুসভ্য জাতি বাস করত এবং তাদের সভ্যতায় আর্যরা ঈর্ষান্বিত ছিল। আর্যদের আগমনের পর আর্য-অনার্য সংমিশ্রণে বাংলার সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক জীবন নুতনভাবে গড়ে ওঠে। জৈনদের গ্রন্থেও বঙ্গ, অঙ্গ, রাঢ় প্রভৃতি জনপদের উল্লেখ পাওয়া যায়।
গৌতম বুদ্ধের ধর্ম প্রচার ও বাংলার জনপদে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব: গৌতম বুদ্ধ তার ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে বাংলায় গমন করেন এবং অনেক সংখ্যক বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী তৈরি করেন। বিখ্যাত চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন সাংয়ের বিবরণী থেকে জানা যায়, স্বয়ং গৌতম বুদ্ধ ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে তৎকালীন বাংলার কর্ণসুবর্ণ, কুমিল্লা বা সমতটে যান এবং সমতটের রাজধানীতে কিছুদিন অতিবাহিত করেন। রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে অশোকের পূর্বেই বাংলায় বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারিত হয় এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতকে বাংলায় বৌদ্ধ ধর্ম প্রাধান্য লাভ করে। বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারে ও প্রসারে প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতি ও সামাজিক জীবনে বিরাট প্রভাব ফেলে। বৌদ্ধ জাতক নামীয় গ্রন্থে প্রাচীন বাংলার বঙ্গ, রাঢ় ও পুণ্ড্রবর্ধন নামক জনপদের উল্লেখ পাওয়া যায়। তা ছাড়া বৌদ্ধ সাহিত্যে বঙ্গ ও সুহ্ম নামে দুটি জনপদের উল্লেখ আছে।
মৌর্য শাসন ও বাংলা (৩২২-১৮৫ খ্রি. পূর্ব): মৌর্য আমলে বাংলার উত্তরবঙ্গ মৌর্য রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হয়। পুণ্ড্রনগর, উত্তরবঙ্গের মৌর্য শাসনের রাজধানী ছিল। মৌর্য বংশের রাজা অশোকের সুশাসন ও জনকল্যাণমূলক কাজের কথা জানা যায়। মৌর্য শাসনকালে রাজনীতি, শিল্প-সংস্কৃতি, বাণিজ্য, প্রশাসন, আইনশৃংখলা, প্রতিরক্ষা, অবকাঠামো, জনকল্যাণ ও সুপরিকল্পিত শাসনব্যবস্থা ছিল। এমনকি সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য রাজকীয় শস্যভাণ্ডার ছিল। যেখানে দুঃসময়ের জন্য শস্য মজুত করে রাখা হতো। এ থেকে বোঝা যায়, মৌর্য আমলে বাংলায় একটি সুনিয়ন্ত্রিত ও সুসংবদ্ধ শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল। খ্রিষ্টীয় প্রথম ও দ্বিতীয় শতকে পেরিপ্লাস গ্রন্থ ও টলেমির বিবরণী থেকে প্রাচীন বাংলার সুসমৃদ্ধ ও সুবিস্তৃত ব্যবসা-বাণিজ্য সমন্ধে জানা যায়। ঐ সময়ে স্বর্ণ মুদ্রার প্রচলন সম্বন্ধে জানা যায়। তা থেকে স্পষ্ট যে, ঐ সময়ে প্রাচীন বাংলায় রাষ্ট্র ও সমাজজাত শাসন, সুগঠিত প্রশাসন ব্যবস্থা ও শৃঙ্খলা বর্তমান ছিল। এ ছাড়া দেশের ভেতরে-বাহিরে সুদূরপ্রসারী আন্ত ও বহির্বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগ ছিল।
গুপ্ত শাসন ও বাংলা (৩১৯ থেকে ৪৬৭ খ্রি.): গুপ্ত সাম্রাজ্যে বাংলা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভারতের ইতিহাসে গুপ্ত শাসনকালকে স্বর্ণযুগ বলা হয়। দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের সময়ে চৈনিক পরিব্রাজক ফা-হিয়েন ভারতে আসেন। গুপ্ত শাসন আমলে স্বর্ণ, রৌপ্য ও তাম্র মুদ্রার প্রচলন হয়। প্রথম চন্দ্রগুপ্তের রাজধানী ছিল পাটালিপুত্র। এ শাসনকালে কুমারগুপ্ত নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। গুপ্ত শাসন আমলে চার প্রকারের কর প্রথা ছিল। ঐ সময়ে তাম্রলিপি ছিল বাংলার অন্যতম শহর ও বন্দর। গুপ্ত শাসনকালে তাম্রলিপি শহরে অনেক বৌদ্ধ বিহার ছিল, যা ফা হিয়েনয়ের বর্ণনা থেকে পাওয়া যায়। ফা হিয়েন তার বর্ণনায় উল্লেখ করেন, সে সময়ে মানুষ সুখী ছিল। রাজা কর্তৃক কোন অত্যাচার-অনাচার ছিল না। মানুষ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী ছিল। জনগণের মধ্যে অধিকাংশ বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিল। সে সময়ে ধনীরা হাসপাতাল তৈরি করত ও অসুস্থদের চিকিৎসা করাত এবং জনগণ উচ্চ মানবিক গুণের অধিকারী ছিল।
গুপ্ত আমলে প্রাচীন বাংলার অধিকাংশ এলাকা গুপ্ত সাম্রাজের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। গুপ্ত শাসনে এ দেশে রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রাদেশিক রূপ চালু হয়েছিল। গুপ্ত আমলে বাংলার প্রশাসনিক কাঠামো বিভক্ত ছিল ভুক্তি (বিভাগ), বিষয় (জেলা), মণ্ডল (থানা), বীথী (ইউনিয়ন) এবং গ্রাম। বৃহত্তর ভুক্তি-বিভাগ ছিল পুণ্ড্রবর্ধন ভুক্তি এবং ক্ষুদ্রতরটি ছিল বর্ধমান ভুক্তি। এ ছাড়া অবশিষ্ট অংশ ছিল সরাসরি কেন্দ্রের অধীন। গুপ্ত সাম্রাজ্যে প্রাদেশিক ও স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা ছিল। গুপ্ত সাম্রাজে পূর্বের তুলনায় উন্নত বিচারব্যবস্থা ছিল। এ শাসনকালে কতকগুলো বিচারের বই সংকলিত হয়। গুপ্ত শাসনে সর্বপ্রথম দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইন সুনির্দিষ্টভাবে আলাদা করা হয়। চুরি ও ব্যভিচারকে ফৌজদারি অপরাধ এবং সম্পত্তি-সম্পর্কিত অপরাধকে দেওয়ানি অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হতো। গুপ্ত বংশের শাসকরা পরোপকারী, দয়ালু এবং শান্তি ও নিরাপত্তার পাশাপাশি জনগণের কল্যাণ দেখতেন। মহাসড়কগুলোতে কোনো অপরাধ ছিল না। রাষ্ট্রের আয় ছিল মূলত ভূমি রাজস্ব। সরকারি কর্মচারীদের বেতন ক্যাশ বা নগদ অর্থে পরিশোধ করা হতো এবং তারা জনগণের নিকট থেকে কোনোরূপ উৎকোচ গ্রহণ করত না।
শশাঙ্ক এবং স্বাধীন বাংলা (৬০০-৬২৫ খ্রি.): গুপ্ত শাসনের সমাপ্তির পর সর্ব প্রথম বাংলা স্বাধীনতা লাভ করে। প্রথম স্বাধীন বাংলার রাজা ছিলেন শশাঙ্ক। তিনিই প্রথম বাংলার বিভিন্ন পরগনা বা জনপদকে একত্রিত করেন এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলা শাসন শুরু করেন। কর্ণসুবর্ণ ছিল সে সময় বাংলার রাজধানী। যদিও ঐ সময়ে বর্তমানের পুরা বাংলাদেশ এ শাসনের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। যে সমস্ত এলাকা এ রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল তা হলো- পুণ্ড্রবর্ধন (বর্তমান উত্তর বঙ্গ), গৌড় (বর্তমান পশ্চিম বঙ্গ ও বাংলাদেশের অংশ), দণ্ডভুক্তি (পশ্চিম বঙ্গের দক্ষিণ অংশ), কর্ণসুবর্ণ (পশ্চিম বঙ্গের অংশ), বরেন্দ্র (বাংলাদেশের উত্তর বঙ্গ), রাঢ় (পশ্চিম বঙ্গের দক্ষিণাংশ), সুম্মাডেশা (দক্ষিণ পশ্চিম অংশ, পশ্চিম বাংলার), ভাংগা (মধ্য বাংলাদেশর), ভ্যানগালা (দক্ষিণ বাংলাদেশ), হরিকেল (উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশ), চন্দ্রদ্বীপ (দক্ষিণ-বাংলাদেশ), সুবর্ণ বীথি (মধ্য বাংলাদেশ), নাভ্যাবাকাশিকা (মধ্য এবং দক্ষিণ বাংলাদেশ), রক্ষণাবতী (উত্তর বঙ্গ ও বিহার) এবং সুমাত্রা (পূর্ব বাংলাদেশ)।
পাল বংশ ও বাংলা: অষ্টম শতকের মাঝামাঝি পাল বংশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। গোপাল পাল বংশের প্রতিষ্ঠা করেন এবং বাংলাদেশে এক নবযুগের সূচনা হয়। প্রায় চারি শত বছর যাবৎ এ রাজবংশ বাংলায় রাজত্ব করে। পাল শাসকরা বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী ছিলেন। পাল শাসন আমলে বাংলায় তিনটি ভুক্তি (বিভাগের) তথ্য জানা যায়। পুণ্ড্রবর্ধন ভুক্তি, বর্ধমান ভুক্তি এবং দণ্ডভুক্তি। এই ভুক্তি বা বিভাগ আবার বিভিন্ন শ্রেণি বা ক্ষুদ্র প্রশাসনিক খণ্ডে বিভক্ত ছিল। ভুক্তির প্রধানকে বা শাসন কর্তাকে উপরিক বলা হতো। তিনি রাজ প্রতিনিধি হিসাবেও কাজ করতেন। এ সময়ের রাষ্ট্রবিন্যাসে সুগঠিত বিচার বিভাগ, রাজস্ব বিভাগ, শান্তিরক্ষা বিভাগ ও সৈন্যবিভাগ ছিল। ঐতিহাসিকদের বর্ণনায় পাল শাসন আমলে বাংলার অনেকগুলো বৌদ্ধ বিহার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। যা পাল বংশের বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার, প্রসার ও শিক্ষাকেন্দ্র হিসাবে কাজ করত। এ সময়ে পাল বংশের শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলায় শিক্ষা ও সংস্কৃতির ব্যাপক উন্নতি ও প্রসার ঘটে। বাংলা সাহিত্যের আদি রূপ চর্চাপদ এ শাসন আমলে সৃষ্ট।
সেন বংশ ও বাংলা (১০৯৭-১২২৫): বিজয়সেন এ রাজ বংশের প্রতিষ্ঠাতা। এ শাসন আমলের উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো পুরা বাংলার বিস্তীর্ণ এলাকা এ শাসনে আসে। নবদ্বীপ ছিল সেন আমলে বাংলার রাজধানী। সেন শাসন আমলে বাংলায় তিনটি ভুক্তি-বিভাগের কথা জানা যায়। পৌণ্ড্র বা পুণ্ড্রবর্ধন ভুক্তি, বর্ধমান ভুক্তি এবং কঙ্কগ্রাম ভুক্তির খবর পাওয়া যায়। সেন রাজাদের আমলে পুণ্ড্রবর্ধন ভুক্তি বিভাগের সীমা উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের প্রায় সমস্ত জনপদ এবং পূর্ববঙ্গে বৃহৎ একটি অংশ এই বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ছিল। পাল পর্বের বর্ধমান ভুক্তি-বিভাগ ভেঙে লক্ষণ সেনের সময় দুটি বিভাগ সৃস্টি হয়, উত্তরে কঙ্কগ্রাম ভুক্তি এবং দক্ষিণে বর্ধমান ভুক্তি। পাল শাসনের ন্যায় রাষ্ট্রখণ্ডের সব বিভাগ সেন আমলেও বিদ্যমান ছিল।
পরিশেষে, প্রাচীন বাংলার এ সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, সাহিত্য ও প্রশাসন ব্যবস্থা আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধিকেই ইঙ্গিত করে।
লেখক: অতিরিক্ত ডিআইজি, কমান্ড্যান্ট, পুলিশ স্পেশাল ট্রেনিং স্কুল (পিএসটিএস), বেতবুনিয়া, রাঙ্গামাটি