/
/
/
ভালো নেতা হতে তোমার যেসব গুণাবলী অর্জন করা প্রয়োজন
ভালো নেতা হতে তোমার যেসব গুণাবলী অর্জন করা প্রয়োজন
ByMozammel Haque Hridoy
Published৯ নভেম্বর, ২০২৫
২:৩৫ অপরাহ্ণ
1762172769579
Mozammel Haque Hridoy
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে লাল সবুজ প্রকাশের সাব-এডিটর হিসেবে কর্মরত। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন সিজে ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা, সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও ‘Northify’ এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের বেরোবি প্রতিনিধি ছিলেন।

কনটেন্টটি শেয়ার করো

Copied!

সর্বশেষ

ldr 1

তুমি হয়তো মনের অজান্তেই কখনও নিজেকে বড় কোনো স্থানে নেতৃত্ব দেয়ার আকাঙ্ক্ষা করে ফেলেছ। কেননা মানুষের সহজাত ও স্বাভাবিক প্রবৃত্তি গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে নেতৃত্বদানের আকাঙ্ক্ষা। পৃথিবীর প্রায় সবাই নিজেকে নেতা হিসেবে দেখানোর সুপ্ত বাসনা লালন করে। নেতৃত্ব হচ্ছে এমন এক গুণ যা কোনো দল অথবা গোষ্ঠীর আচরণ ও কাজকে নির্দিষ্ট লক্ষের দিকে এগিয়ে নিয়ে উদ্দেশ্য সাধন করা। যার নেতৃত্বের গুণ আছে এবং নেতৃত্ব দেয় তাকে বলা হয় নেতা।

একটু আগে যেমন বললাম প্রায় সবারই নিজের আকাঙ্খা থাকে নেতা হওয়ার কিন্তু শুধু আকাঙ্ক্ষা বা ইচ্ছে থাকলেই নেতা হওয়া যায়না। এর জন্য নিজেকে গড়ে তুলতে হয় বিভিন্ন গুণাবলী অর্জন করে। আর এজন্য প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন, সঠিক ও সচেতন চিন্তাধারা ও উদ্যমী মন। বিশ্বের বহু লেখক, গবেষক ও দার্শনিক নেতৃত্ব অর্জনের বিভিন্ন পন্থা, গুণাবলীর কথা উল্লেখ করেছেন তাদের লেখনী কিংবা বক্তব্যে।

দক্ষ, সফল নেতা হতে হলে কিছু গুণ অবশ্যই অর্জন করে নিতে হয়। এখন আমরা সেসব গুণের কথাই জানব। নেতৃত্ব অর্জনের জন্য তোমাকে অবশ্যই যোগাযোগ দক্ষতা, ধৈর্য্য, আত্মবিশ্বাস ও আত্মসচেতনতা, সততা ও দৃঢ়তা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সৃজনশীলতা, দায়বদ্ধতা, সুবক্তা ও ভালো শ্রোতা, উদ্যমী, অনুপ্রাণিত করার দক্ষতা আয়ত্ত করতে হবে।

চলো এবারে এসম্পর্কে জেনে নিই,

যোগাযোগ দক্ষতা: যোগাযোগ দক্ষতা প্রতিটি ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। নেতৃত্ব প্রদানের সময় কখন কাকে কিভাবে কথা বলবে সেটির উপরও অনেক কিছুই নির্ভর করে। ভালো একজন নেতা তার প্রতিটি কর্মী কিংবা সংশ্লিষ্ট সবার সাথে ইতিবাচক যোগাযোগ স্থাপন করে তার কর্মকে সফলতা এনে দেয়।

ধৈর্য্য: প্রতি নেতারই সময় নিয়ে ধৈর্যের সাথে সিদ্ধান্ত গ্রহণ জরুরি৷ ভালো একজন নেতা কখনও হটকারি সিদ্ধান্ত নেয়না। তার ধৈর্যের গুণ তাকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে।

আত্মবিশ্বাস ও আত্মসচেতনতা: তুমি যদি তোমার নিজেকে চেনো, জানো তাহলেই কেবল তোমার ভালোমন্দ সঠিকভাবে বিচার করতে পারবে। আবার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস, নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহণেও সহায়তা করে। অর্থাৎ একজন নেতার সফল নেতৃত্বের জন্য এই গুণ অপরিহার্য।

সততা ও দৃঢ়তা: কোনো কাজের মূল ভিত্তিই কিন্তু হলো সততা ও দৃঢ়তা। নেতা যদি সৎ না হয় সেক্ষেত্রে কিন্তু মানুষ তার থেকে আস্থা হারায়, এক্ষেত্রে নেতৃত্ব টিকিয়ে রাখতে সৎ হওয়ার বিকল্প নেই, সততা ও দৃঢ়তা সফল নেতাকে পথ দেখায় ও পথ সুগম করে।

সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা: একজন নেতার অনেক সময়ই জটিল, কঠিন ও দোটানার মধ্যে পড়তে হয়। সেক্ষেত্রে তাকে ইমার্জেন্সি মূহুর্তেও সিদ্ধান্ত নিতে হয় তখন আসলে কোন সিদ্ধান্ত নিলে তার দল ও কর্মীর জন্য ভালো হয় সেই গুণ থাকা জরুরি। এক্ষেত্রে তথ্য, অভিজ্ঞতা ও বিচারবোধ তাকে সাহায্য করে সফলতা এনে দিতে।

সৃজনশীলতা: মানুষের সহজাত প্রবৃত্তিই হলো গতানুগতিকভাবে চালিয়ে যাওয়া বা মানিয়ে নেয়া এবং গ্রহণ করা। তবে তুমি যখন একজন ভালো নেতা সেক্ষেত্রে এমন সৃজনশীল কিছু তৈরি করা যা তোমার অনুসারীদের নজর কাড়ে, বিশ্বাস বাড়ায় এবং তা সফলতা আনতে সহায়ক হয়। সৃজনশীলতা মূলত দলের উদ্ভাবনী চিন্তাকে প্রশমন ও সহায়তা করে।

দায়বদ্ধতা: এমন অনেক মূহুর্তই আসে যখন দল কিংবা গোষ্ঠীর ক্ষতি হয়ে যায় সেক্ষেত্রে দলের নেতার সেই ক্ষতির দায় গ্রহণ করার মানসিকতা তাকে আরো গ্রহণযোগ্য করে তোলে। কর্মীরা ভাবেন ভুল তো তার একার না এক্ষেত্রে সবারই দায় আছে কিন্তু নেতা তা গ্রহণ করছে। এর ফলে নেতার প্রতি বিশ্বাস ও দল সুসংগঠিত হওয়ার প্রবণতা থাকে।

ভালো শ্রোতা ও সুবক্তা: নেতার অন্যতম একটি গুণাবলীর মধ্যে হলো বলা কম শোনা বেশি৷ একজন নেতা যতবেশি তার কর্মীর এবং সংশ্লিষ্টদের কথা শুনে বোঝার চেষ্টা ও গ্রহণ করার চেষ্টা করে তার গ্রহণযোগ্যতাও তত বৃদ্ধি পায়। আবার সংক্ষেপে সুন্দর ও তথ্যবহুল বক্তব্যও কর্মীদের আকৃষ্ট করে। এক্ষেত্রে এই গুণ নেতার বিকাশে অত্যন্ত জরুরি।

উদ্যমী ও অনুপ্রাণিত করার দক্ষতা: একজন নেতার মাঝে উদ্যমী গুণ থাকা আবশ্যক। কোনো বিষয়ে নেতার উদ্যম পুরো দলকেই অনুপ্রাণিত করে নতুন মাত্রা যোগ করে। কর্মী, সমর্থক ও দলের সবাইকে নিজেদের কাজে অনুপ্রাণিত করার দক্ষতা নেতাকে সফল হতে সহায়তা করে। যে সহজ ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করতে পারে সেই ভালো নেতা।

এসকল গুণ তোমাকে নেতৃত্ব অর্জনের জন্য সাহায্য করবে এবং দক্ষ করে গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবে। তবে এছাড়াও কিছু গুণাগুণ রয়েছে সেসবও আয়ত্ত করতে হবে এবং কিছু কাজ আছে যা করা যাবেনা৷ তবে শুধু এসব সম্পর্কে জানলেই হবে না। মানতে হবে এবং অনুশীলন করে নিয়মিত শাণিত করতে হবে। নিজের সম্পর্কে জেনে নেতৃত্ব দানের গুণাবলী অর্জন করে হয়ে ওঠো সফল নেতা।