/
/
/
ডিজিটাল অংশগ্রহণ ও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে চালু হলো ‘সিভিকশিল্ড’
ডিজিটাল অংশগ্রহণ ও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে চালু হলো 'সিভিকশিল্ড'
Byরুশাইদ আহমেদ
Published১৭ নভেম্বর, ২০২৫
১:৪২ অপরাহ্ণ
আরইউএস_21
রুশাইদ আহমেদ
রুশাইদ আহমেদ অধ্যয়ন করছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। উন্নয়ন, মানবাধিকার, যোগাযোগ, ভূরাজনীতিসহ বিবিধ বিষয়ে তিনি দেশের জাতীয় দৈনিকগুলোতে নিয়মিত লেখালেখি করে থাকেন। সাংবাদিকতা এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের ওপরও রয়েছে তাঁর তুমুল ঝোঁক।

কনটেন্টটি শেয়ার করো

Copied!

সর্বশেষ

CIVICshield

দেশব্যাপী ডিজিটাল অংশগ্রহণ ও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করতে সিভিকশিল্ড নামের একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে জলবায়ু, মানবাধিকার ও উন্নয়নমূলক সংগঠন এরাইজ ফাউন্ডেশন।

গত রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে দীর্ঘদিনের গবেষণা ও কমিউনিটির বাস্তব অভিজ্ঞতাকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা এই প্ল্যাটফর্মটি নাগরিক ক্ষমতায়ন ও ডিজিটাল ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখাবে বলে আশা করছেন উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা।

ওয়েবসাইটটিতে রয়েছে প্রান্তিক, আদিবাসী কমিউনিটির গল্প ও বাস্তব অভিজ্ঞতা, অডিও ভিত্তিক মানবিক কণ্ঠস্বর ও সাক্ষ্য, তথ্য, সরঞ্জাম ও শেখার রিসোর্স এবং নাগরিক অংশগ্রহণ ও ডিজিটাল অধিকার সম্পর্কিত নির্দেশনা। সিভিকশিল্ড এমন একটি ডিজিটাল পরিসর তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে নাগরিকদের কণ্ঠস্বরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

উদ্বোধনী বার্তায় সিভিকশিল্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই প্ল্যাটফর্ম মানুষের জন্য একটি নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক স্থান হিসেবে কাজ করবে। যেখানে প্রত্যেক নাগরিক ডিজিটাল জগতে তাদের ক্ষমতাকে অনুভব করতে পারবেন। এটি হবে ব্যক্তিগত, নিরাপদ এবং সবার জন্য উন্মুক্ত, যা অংশগ্রহণের সমান সুযোগ নিশ্চিত করবে।

জানা যায়, সিভিকশিল্ডের লক্ষ্য হলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা সামনে আনা, ডিজিটাল গল্পচর্চাকে উৎসাহিত করা এবং নাগরিক অধিকার ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। প্ল্যাটফর্মটি নারী, যুবসমাজ, আদিবাসী জনগোষ্ঠী, অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক এবং তৃণমূলের অধিকারকর্মীসহ সকলকে অর্থবহ ও আত্মবিশ্বাসীভাবে নাগরিক জীবনে অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করে।

সিভিকশিল্ড টিমে সাইয়াদা তাসনিম (গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ); নাজনীন মুসফিকা (প্রশিক্ষণ ও যুব সম্পৃক্ততা); সুরমা আফরোজ মিলি (আইন ও অধিকার); আহসান হাবিব (অন্তর্ভুক্তি ও বৈচিত্র্য); বিশাখা সাহা (কনটেন্ট ও মিডিয়া); নাফিসা খুশি (অপারেশনস ও প্রশাসন); অফসানা ইসলাম আর্ণিকা (ফাইন্যান্স ও একাউন্টস) দায়িত্ব পালন করছে। তাঁরা সকলেই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী।

প্রযুক্তির সঙ্গে কমিউনিটি নির্ভর অংশগ্রহণকে একত্রিত করে সিভিকশিল্ড একটি সচেতন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত সমাজ গড়ে তোলার আশা করছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

সিভিক শিল্ডের কনটেন্ট ও মিডিয়া শাখার দায়িত্বে থাকা বিশাখা সাহা বলেন, এরাইজ ইয়ুথ ফাউন্ডেশন বিগত ছয় বছর ধরে যে দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করছে-তাতে আরেকটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে সিভিকশিল্ড কর্মসূচি। এখানে প্রযুক্তিনির্ভর পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীরা যেন নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্তি ও ইস্তেহার উপস্থাপন করতে পারেন সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে প্ল্যাটফর্মটি প্রতিবন্ধী, হরিজন সম্প্রদায়, চা শ্রমিকসহ অন্যান্য প্রান্তিক জনসমষ্টিকে এই পরিকল্পনার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এরাইজ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মো. নূর হাশেম বাঁধন বলেন, সিভিকশিল্ড কর্মসূচির আওতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক লিগ্যাল এইড সাপোর্ট, তাৎক্ষণিক সহায়তার জন্য এআই চ্যাটবট, সিভিক লার্নিং হাব, গুজব ও ভুল তথ্য শনাক্তকরণ ব্যবস্থা, এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং ও ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রম পরিচালনার ইচ্ছে রয়েছে আমাদের। এছাড়া তরুণদের মতামত ও প্রত্যাশা সংগ্রহ করে ভবিষ্যতের নীতি নির্ধারণে তরুণদের দাবিকে তুলে ধরতে একটি ইয়ুথ ম্যানিফেস্টো তৈরি করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

একইসঙ্গে, আসন্ন নির্বাচনি প্রক্রিয়া আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে এরাইজ সহজ ভাষায় নির্বাচনি প্রচারণা ও ইস্তেহার উপস্থাপনের উদ্যোগও নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নূর হাশেম বাঁধন এরাইজ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে শিশুদের নিয়ে কাজ করলেও বর্তমানে সংস্থাটি জলবায়ু, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলো নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছে।