/
/
গুজব না খবর: সত্যকে যাচাইয়ের ডিজিটাল কৌশল
গুজব না খবর: সত্যকে যাচাইয়ের ডিজিটাল কৌশল
Byকারিমা ইসলাম
Published১৭ আগস্ট, ২০২৫
৩:৪৮ অপরাহ্ণ
Karima
কারিমা ইসলাম
কারিমা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-এর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী এবং লাল সবুজ প্রকাশের ফিচার লেখক। সে লেখালেখির মাধ্যমে বৈশ্বিক সমস্যা, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তরুণদের সচেতন করতে কাজ করে। তার স্বপ্ন লেখার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী তরুণদের সংযুক্ত করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা।

কনটেন্টটি শেয়ার করো

Copied!

সর্বশেষ

Untitled design (4)

কখনও কি এমন হয়েছে যে, মাঝরাতে ঘুম ভেঙে দেখেছো তোমার মেসেজবক্সে একটি নতুন বার্তা— ‘অভিনন্দন! আপনি একটি নতুন আইফোন জিতেছেন!’ অথবা সকালে ঘুম থেকে উঠে মেসেজে বন্ধুদের থেকে এমন একটি ভিডিওর লিঙ্ক— ‘আগামীকাল থেকেই দেশে ভয়াবহ বন্যা শুরু, ডুবে যাবে সারাদেশ!’ এই ধরনের খবর দেখে মুহূর্তেই আমাদের কপালে ভাঁজ পড়ে যায়। তরুণ থেকে শুরু করে প্রবীণ, আমরা সবাই প্রায়ই এমন সব ভুল তথ্যের জালে আটকা পড়ি।

ডিজিটাল দুনিয়ার এই অসীম সাগরে সত্য আর মিথ্যার ঢেউ একসাথে আছড়ে পড়ে। আমাদের হাতে থাকা স্মার্টফোনটি এখন কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং এটি তথ্যের এক মহাসাগর। এই মহাসাগরেই লুকিয়ে আছে এমন সব ফাঁদ, যা থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো তথ্যের সত্যতা যাচাই বা “ফ্যাক্ট-চেকিং”।

ফ্যাক্ট-চেকিং এর কয়েকটি সহজ উপায়:

১. ছবি ও ভিডিওর সত্যতা যাচাই: আজকাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে খুব সহজেই ভুয়া ছবি এবং ভিডিও তৈরি করা যায়। অনেকেই আবেগের বশে এসব ছবি বা ভিডিও একবার দেখেই বিশ্বাস করে ফেলে। তোমার কাছে যদি এরকম কোনো ছবি বা ভিডিও সন্দেহজনক মনে হয়, তবে অনলাইনে এআই ডিটেকশন টুল ব্যবহার করে খুব সহজেই যাচাই করে নিতে পারো। এমন কয়েকটি ফ্রী, কার্যকরী ও জনপ্রিয় এআই টুল এর নাম হলো— “AI or Not”, “Fotoforensics” ও “Hugging Face AI Image Detector”।

২. অসামঞ্জস্যতা খুঁজে বের করা: অনেক সময় ভুয়া তথ্যের মধ্যে কিছু অস্বাভাবিক বিষয় থাকে, যা একটু মনোযোগ দিয়ে দেখলেই বোঝা যায়। যেমন, কোনো ভয়াবহ ঘটনার মধ্যেও কারো মুখের অভিব্যক্তি যদি খুব স্বাভাবিক মনে হয়, তবে সেটি অবশ্যই সন্দেহের। সেক্ষেত্রে এই তথ্যটি অন্যকে শেয়ার করার আগে যাচাই করে নেওয়া প্রয়োজন।

৩. স্থানের সত্যতা যাচাই: কোনো খবর বা ছবির সাথে যদি কোনো নির্দিষ্ট স্থানের নাম উল্লেখ থাকে, তবে গুগল ম্যাপের মতো টুল ব্যবহার করে সেই স্থানটি যাচাই করো। যদি সেই স্থানের বর্ণনা বা চিত্র খবরের সাথে না মেলে, তবে ধরে নিতে পারো খবরটি ভুয়া।

৪. ‘ল্যাটারাল রিডিং’ অনুশীলন: এটি সত্যতা যাচাইয়ের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এর অর্থ হলো, তুমি কোনো একটি খবর পড়ার সময় শুধুমাত্র সেই উৎস বা ওয়েবসাইটেই সীমাবদ্ধ না থেকে অন্যান্য নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট বা সংবাদমাধ্যম থেকে একই বিষয় সম্পর্কে তথ্য খুঁজে বের করতে পারো। এটি তোমাকে একটি নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিবে এবং ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে।

বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। এই যুগে তোমার প্রতিটি লাইক বা শেয়ার ডিজিটাল সমাজকে প্রভাবিত করে। ফলে, তোমার শেয়ার করা একটি ভুয়া তথ্য সমাজে যেকোনো বিভেদ, বিশৃঙ্খলা বা অপ্রত্যাশিত বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই, কোনো খবর বিশ্বাস করার আগে বা শেয়ার করার আগে এক মুহূর্তের জন্য নিজেকে প্রশ্ন করো— আমি কি নিশ্চিত যে এটি সত্য?