/
/
/
জলবায়ু সংকটে শিক্ষার অগ্রাধিকার: প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জলবায়ু শিক্ষা চাই
জলবায়ু সংকটে শিক্ষার অগ্রাধিকার: প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জলবায়ু শিক্ষা চাই
Byআবদুল কাইয়ুম
Published২৬ আগস্ট, ২০২৫
৩:১৪ অপরাহ্ণ
IMG-20250818-WA0248 (1)
আবদুল কাইয়ুম
আবদুল কাইয়ুম ফেনীর বাসিন্দা ও চট্টগ্রামের উদ্যমী যুব নেতা, বর্তমানে গভর্নমেন্ট কমার্স কলেজে মার্কেটিং বিভাগে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। তিনি লাল সবুজ সোসাইটি চট্টগ্রামের নেতৃত্বদানকারী সদস্য এবং সম্প্রতি ICCCAD ইয়ুথ ফেলোশিপ 2025-এ নির্বাচিত হয়েছেন। তার স্বপ্ন বাংলাদেশে একটি টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যত গড়ে তোলা।

কনটেন্টটি শেয়ার করো

Copied!

সর্বশেষ

Untitled design (10)

বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু পরিবর্তনজনিত একটি ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী কয়েক দশকে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে, কৃষি উৎপাদন ৩০% পর্যন্ত কমে যেতে পারে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে বহুগুণ। এই সংকট মোকাবিলায় আমাদের তরুণ প্রজন্ম সবচেয়ে বড় শক্তি, কিন্তু প্রস্তুতি ও জ্ঞানের দিক থেকে তারা এখনও অনেক পিছিয়ে।

বর্তমানে দেশের হাতে গোনা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ থাকলেও অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজেই নেই পরিবেশ বিষয়ক স্বতন্ত্র বিভাগ, নেই জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বাধ্যতামূলক পাঠ্যসূচি। অথচ জলবায়ু পরিবর্তন এখন আর শুধু বিজ্ঞানীদের গবেষণার বিষয় নয়, বরং এটি প্রতিটি নাগরিকের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো সচেতনতা ও শিক্ষা। শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে, যেমন- স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ সংরক্ষণ, টেকসই উন্নয়ন ও অভিযোজন কৌশল পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। এতে শিক্ষার্থীরা শুধু বইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং বাস্তব জীবনের সমস্যাগুলো মোকাবিলাতেও দক্ষতা ও উদ্ভাবনী চিন্তা অর্জন করবে।

বিশ্বের অনেক উন্নত দেশই ইতোমধ্যে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় জলবায়ু পরিবর্তনকে বাধ্যতামূলক বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ফিনল্যান্ড, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, এমনকি প্রতিবেশী ভারতেও স্কুল পর্যায়ে পরিবেশ শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বাংলাদেশেও এমন উদ্যোগ গ্রহণ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারন, আমাদের তরুণদের মাঝে যদি জলবায়ু সম্পর্কিত জ্ঞান ও দক্ষতা থাকে, তাহলে তারাই হবে আগামী দিনের সবুজ যোদ্ধা, যারা শুধু নিজেদের নয় বরং পুরো দেশের ভবিষ্যৎ রক্ষা করবে।

সরকার, নীতিনির্ধারক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সমাজের সব স্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান— জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় শিক্ষা ব্যবস্থায় জরুরি পরিবর্তন আনুন। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক পাঠ্যক্রম চালু করুন। শুধু তাত্ত্বিক শিক্ষা নয়, জলবায়ু সমস্যা সমাধানে বাস্তবমুখী ও গবেষণাভিত্তিক শিক্ষা নিশ্চিত করুন।

জলবায়ু পরিবর্তনের এই সংকটময় সময়ে তরুণদের প্রস্তুত করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তরুণদের হাতে জ্ঞান ও সচেতনতার আলো তুলে দিতে পারলেই গড়ে উঠবে টেকসই, নিরাপদ ও সবুজ বাংলাদেশ। কারন, জলবায়ু পরিবর্তন এখন শুধু বৈশ্বিক সংকট নয় বরং জাতীয় সংকট। এখনই সময় শিক্ষা দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার।