
পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন, টেকসই উদ্ভাবন ও জলবায়ু সহনশীলতার পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে রাজধানী ঢাকায় পালিত হয়েছে এনভায়রনমেন্ট ইনোভেশন সামিট অ্যান্ড অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫।
গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার দোয়েল চত্বরের বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠান শুরু হয়।
এ সামিটের আয়োজন করেছে মিশন গ্রিন বাংলাদেশ এবং এর সহ-আয়োজক হিসেবে ছিল ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, ঢাকা ইউনিভার্সিটি রিসার্চ সোসাইটি (ডিইউআরএস), ক্যাচ বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশন ও নিরাপদ অ্যালায়েন্স। আয়োজনে সহযোগিতা করছে বায়োফার্মা লিমিটেড, মেটাফর স্পোর্টস ও এএমএ অথেনটিক ব্রাজিলিয়ান কফি।
এ আয়োজনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবেশকর্মী, গবেষক, শিক্ষার্থী, তরুণ উদ্যোক্তা ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। আয়োজকরা জানায়, এ সামিটে প্রায় হাজার উদ্ভাবনী তরুণ নেতৃত্ব আবেদন করে তার মধ্যে যাচাই বাচাই ও বিভিন্ন ধাপ শেষে ২৪টি টিমকে প্রদর্শনীর সুযোগ দেয়া হয়। তার মধ্যে ১০টি টিমকে বাছাই করে তাদের উদ্ভাবন উপস্থাপনের জন্য মঞ্চে উপস্থাপন করা হয়।
আয়োজকদের মতে, এই প্ল্যাটফর্ম পরিবেশবান্ধব চিন্তা, গবেষণা ও কার্যকর সমাধান বিনিময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি করেছে।
এ সামিটের অন্যতম অংশ ছিল ইয়ুথ প্যানেলের আলোচনা। এতে তরুণ জলবায়ু কর্মী, ছাত্রনেতা ও উদ্ভাবকেরা অংশ নিয়ে জলবায়ু ন্যায়বিচার, সবুজ উদ্যোক্তা, কমিউনিটি-ভিত্তিক অভিযোজন এবং নীতিনির্ধারণে তরুণদের ভূমিকা নিয়ে মতামত তুলে ধরেন। তাদের বক্তব্য সামিটে নতুন আশার সঞ্চার করে এবং আন্তঃপ্রজন্মভিত্তিক জলবায়ু নেতৃত্বের আহ্বান জানায়।
এছাড়াও দিনব্যাপী উদ্ভাবন প্রদর্শনী, পাপেট শো, সেশনসহ নানা ধরনের আয়োজন করা হয় এ অনুষ্ঠানে।
সামিটে পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘পরিবেশ সংরক্ষণে উদ্ভাবন ও তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ টেকসই উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ এবং যুবসমাজের নেতৃত্বের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
অংশগ্রহণকারীরা জানায়, এ ধরনের আয়োজন আমাদের জন্য সত্যিই অনুপ্রেরণার। নিজেদের উদ্ভাবন দেখানোর সুযোগ পাচ্ছি এবং একইসাথে ভুলত্রুটি ও ভালো হলে সেটা সরাসরি ফিডব্যাক পাচ্ছি ও সহায়তারও সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে এ সামিট।’
মিশন গ্রিন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি লাল সবুজ প্রকাশকে বলেন, “পৃথিবীতে টেকসই উদ্ভাবনী প্রয়োজন। এ আয়োজনে উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবকরা নানামুখী নতুন ইনোভেশন তুলে ধরেছে যা পরিবেশ রক্ষায় কাজ করবে। আগামীতে আরো বৃহৎভাবে আয়োজন করে পরিবেশভিত্তিক উদ্ভাবন বৃদ্ধি ও মানসম্মত করার প্রত্যয় থাকবে। মিশন গ্রিন বাংলাদেশের এধরনের আয়োজন পরিবেশ উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।”
আয়োজকদের মতে, এ সামিট শুধু একটি সম্মেলন নয়, বরং এটি পরিবেশবান্ধব নেতৃত্ব, উদ্ভাবনী চিন্তা ও সম্মিলিত উদ্যোগের এক শক্তিশালী মিলনমেলা। এই আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশে পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ে কার্যকর আলোচনা এবং বাস্তবভিত্তিক সমাধানের পথ আরও সুগম হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।