

ময়মনসিংহ নগরীর মৃত্যুঞ্জয় স্কুল এলাকায় আবিষ্কৃত হয়েছে ৩২৬ বছরের প্রাচীন এক মুদ্রণযন্ত্র। ১৬৯৯ সালে নির্মিত এই ঐতিহাসিক যন্ত্রটির আগমন ঘটে ময়মনসিংহে পূর্ব প্রজন্মের প্রগতিশীল মানুষদের হাত ধরে। প্রাচীন মুদ্রণ ঐতিহ্যের এ নিদর্শনটি বর্তমানে স্থানীয়ভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
গত ৬ আগস্ট পুরাকীর্তি সুরক্ষা কমিটির ময়মনসিংহ অঞ্চলের একটি প্রতিনিধি দল মুদ্রণযন্ত্রটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে। তারা জানান, যন্ত্রটি অমূল্য ঐতিহাসিক সম্পদ এবং এটি সংরক্ষণের জন্য দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এ বিষয়ে শিগগিরই প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হবে।
পুরাকীর্তি সুরক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ইউরোপে ১৫ শতকের মাঝামাঝি সময়ে মুদ্রণশিল্পের প্রসার ঘটে। ১৪৫০ সালে জার্মান উদ্ভাবক জোহানেস গুটেনবার্গ ধাতব চলনশীল অক্ষর ব্যবহার করে প্রথম মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কার করেন। এরপর থেকে বিশ্বব্যাপী মুদ্রণ প্রযুক্তিতে বিপ্লব ঘটে।
তিনি আরও জানান, ভারতীয় উপমহাদেশে মুদ্রণযন্ত্রের যাত্রা শুরু হয় পর্তুগিজদের হাত ধরে। ১৫৫৬ সালে তারা গোয়ায় প্রথম ছাপাখানা স্থাপন করে। ধীরে ধীরে এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়ে এবং মুদ্রণশিল্পের প্রসার ঘটে। এর প্রভাব প্রাচীন নগরী ময়মনসিংহেও পৌঁছায়, যার এক জীবন্ত সাক্ষী মৃত্যুঞ্জয় স্কুল এলাকায় পাওয়া এই প্রাচীন মুদ্রণযন্ত্র।
স্থানীয় ইতিহাসবিদরা বলছেন, সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা গেলে এই মুদ্রণযন্ত্র কেবল ময়মনসিংহের গৌরবই বাড়াবে না, বরং অঞ্চলের সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাক্ষ্য বহনকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে।