

খুলনার শরণখোলা উপজেলার তিন ইউনিয়নে ছয়টি পন্ড স্যান্ড ফিল্টার (পিএসএফ) সংস্কার ও একটি নতুন পিএসএফ নির্মাণ করা হয়েছে। লাল সবুজ সোসাইটির উদ্যোগে এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের অর্থায়নে বগী, চালিতাবুনিয়া ও খুড়িয়াখালি ইউনিয়নে এসব কাজ সম্পন্ন হয়। এতে প্রায় তিনশত পরিবার নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানির সুবিধা পাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, লবণাক্ততার কারণে শরণখোলার অধিকাংশ ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট বিরাজ করছে। কোথাও কোথাও দুই থেকে তিন কিলোমিটার এলাকায় কোনো নিরাপদ পানির উৎস ছিল না। ফলে নারী ও কিশোরীদের সকাল-বিকাল কয়েক কিলোমিটার হেঁটে পানি সংগ্রহ করতে হতো। এতে তাদের শিক্ষা ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হতো। শিশুরা দূষিত পানি পান করে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়তো, আর নারীরা লবণাক্ত পানি ব্যবহারে নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন।

লাল সবুজ সোসাইটি শরণখোলা টিম মাঠপর্যায়ে গিয়ে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে এবং উঠান বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে গ্রামবাসীদের জানানো হয়- কীভাবে নিয়মিত পিএসএফ পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে, পানিকে ঢেকে রাখতে হবে, ফুটিয়ে খেতে হবে এবং পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।

লাল সবুজ সোসাইটির ক্লাইমেট একশন ফোকাল আল মামুন রাকিব বলেন, কোনো সমস্যার সমাধানে কমিউনিটির মতামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন প্রথম শরণখোলা পরিদর্শন করি, স্থানীয়রা আমাদের দেখান কতগুলো প্লান্ট অকার্যকর হয়ে আছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতেই আমরা প্রথম ধাপে একটি নতুন প্লান্ট নির্মাণের পরিবর্তে তিনটি প্লান্ট সংস্কার করি। ঢাকায় বসে হয়তো এই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হতো না। তাই কমিউনিটির সমস্যা সমাধানে সর্বপ্রথম কমিউনিটির মতামতকেই গুরুত্ব দিতে হবে।
এখন পর্যন্ত ছয়টি পিএসএফ সংস্কার ও একটি নতুন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি প্লান্ট থেকে ৩০–৫০টি পরিবার নিরাপদ পানির সুবিধা পাচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও দুটি সংস্কার ও একটি নতুন নির্মাণের কাজ চলছে।

আগামীতে ১০০টি পিএসএফ সংস্কারের পরিকল্পনা করছে লাল সবুজ সোসাইটি। সংগঠনটির আশা, এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে শরণখোলা উপজেলার বিশুদ্ধ পানির সংকট অনেকাংশে নিরসন হবে।