/
/
শীতে আগুন পোহাতে সতর্ক হও, জেনে নাও করণীয়
শীতে আগুন পোহাতে সতর্ক হও, জেনে নাও করণীয়
ByMozammel Haque Hridoy
Published১৫ নভেম্বর, ২০২৫
১:০৩ অপরাহ্ণ
1762172769579
Mozammel Haque Hridoy
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে লাল সবুজ প্রকাশের সাব-এডিটর হিসেবে কর্মরত। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন সিজে ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা, সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও ‘Northify’ এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের বেরোবি প্রতিনিধি ছিলেন।

কনটেন্টটি শেয়ার করো

Copied!

সর্বশেষ

flame lsp

গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত মিলে বাংলাদেশকে বলা হয় ষড়ঋতুর দেশ। পালাক্রমে এক ঋতুর পর অন্যটি আসে। যদিও দেশে গ্রীষ্ম ও শীত ঋতুরই বেশি দাপট চলে৷ কার্তিক মাস থেকে শীতের ছোঁয়া পেতে শুরু উত্তর ও উত্তরপশ্চিমবঙ্গ অঞ্চলের মানুষ। শীতের আবহাওয়া অনেকটাই কাবু করে রাখে বাংলার প্রকৃতিকে।

আগামীকাল থেকে শুরু হবে অগ্রহায়ণ মাস। এ মাসে শীতের বার্তা আসে বাংলার প্রকৃতিতে, হালকা শিশির, কুয়াশায় ছেঁয়ে যায় চারদিক। আর পৌষে নেমে আসে হাড় কাঁপানো শীত। আর এই শীতকে রুখতে এবং সামান্য উষ্ণতার জন্য মানুষ আগুনের তাপ নেয়। অনেকসময় অসতর্কতায় ঘটে যায় বড় ধরনের দুর্ঘটনায়। আগুন পোহাতে গিয়ে খুইয়ে ফেলেন নিজেদের জীবন। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের মানুষেরা এই দুর্ঘটনার শিকার হয় বেশি।

এবছর এখনও শীত সেভাবে নামতে শুরু করেনি, কেবলমাত্র উত্তরবঙ্গে হালকা শীত পড়তে শুরু করেছে। অথচ এখনই শুরু হয়েছে আগুনে পোড়ার ঘটনা! শুধু তাই নয় গতকাল শুক্রবার(১৪ নভেম্বর) বগুড়ার শেরপুরে আগুনে পুড়ে মৃত্যু বরণ করেছে এক বৃদ্ধা!

ভাবো তো, এখনও শীতই পড়েনি অথচ এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো ঘটে চলছে। আরেকটা তথ্য দিই, ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসের ২০ দিনের মধ্যেই শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে শুধুমাত্র রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন অন্তত ২৩ জন। এ সংখ্যা প্রায় প্রতি শীতেই দেখা যায়। পুরো বাংলাদেশে সে হিসেবে কত মানুষ শীতের মৌসুমে শুধু আগুনে তাপ নিতে গিয়ে মারা যায় সেই হিসেব করলে সংখ্যাটা অনেক বড়ই হবে এবং তা অবশ্যই ভাবনার কারণ। সামান্য একটু অসাবধানতায় মানুষ নিজেদের জীবন হারিয়ে ফেলছে এটা এযুগে এসে কোনোভাবেই কাম্য নয়।

একটু উষ্ণতার খোঁজে মানুষ সামান্য অসচেতন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে গ্রামের বৃদ্ধ, মহিলা ও শিশুরা।

চলো জানব কেনো আগুনে পুড়ে যায় তার কারণগুলো কি হতে পারে,

১.কম্বলের নিচে অনেকেই আগুন বা কয়লা রাখে সামান্য গরমের জন্য যা ঝুঁকি হতে পারে।

২.বদ্ধ করে আগুন জ্বালায় যা খুবই মারাত্মক, কেননা বদ্ধ ঘরে ধোয়া থেকে আগুনের বৃদ্ধি পায়।

৩. শিশু ও বৃদ্ধদের পাশে আগুন লাগিয়ে খোঁজ না নেয়া।

৪. পুরানা লাকড়া, কাপড় বা কাগজ পুড়িয়ে যায় যা সহজেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

৫. মাটির চুলায় অনেকেই আগুন লাগায় যেখানে লাকড়া বা শুকনা পাতা সঠিকভাবে রাখে না যার ফলে এ ঘটনা ঘটে।

৬. অনেকেই আগুন লাগিয়ে ঘুম দেয় যার ফলে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যায়।

৭. ঢিলেঢালা ও দাহ্য পোশাক পড়ে যার ফলে আগুনের কাছে গেলে তা সহজেই আগুন লাগার সম্ভাবনা থাকে।

৮. অসাবধানতার কারণেই সবচেয়ে বেশি আগুন লাগে৷ সচেতনতার অভাবে ঘটে দুর্ঘটনা।

এবারে চলো জেনে নেয়া যাক এর থেকে বাঁচতে করণীয় কি-

সচেতন হওয়া: আগুন খুবই মারাত্মক একটি উপাদান। তাই আগুনের ক্ষতিকর দিককে অবহেলা না করে প্রতিটি বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। সতর্কতা অবলম্বন করেই আগুন পোহাতে হবে।

দূর্বলদের প্রতি সতর্ক হওয়া ও বালু বা পানি রাখা: যারা শারিরীকভাবে দূর্বল তাদের কাছে তাপ সৃষ্টির জন্য সবসময় সতর্ক থাকা এবং আগুন পোহানোর আশেপাশে বালু বা পানি রাখা।

নিরাপদ পন্থা অবলম্বন করা: আগুন পোহাতে সবসময় নিরাপদ পন্থা অবলম্বন করতে হবে। বিকল্প উষ্ণ উৎস অবলম্বন করে তাপ নেয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

আগুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা জানা: আগুন লাগলে কিভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এবং সহজেই কিভাবে প্রতিকার করা যায় সে সম্পর্কে ধারণা ও প্রশিক্ষণ নেয়া যেতে পারে।

পোশাকের বিষয়ে সতর্কতা ও সচেতনতা: কোন পোশাকে তুমি আগুন পোহাতে যাচ্ছো সেটা সম্পর্কেও জেনে নিয়ে তারপর সাবধানতার সঙ্গে আগুন পোহালে এ ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

সর্বোপরি শীতের সামান্য উষ্ণতা যেন তোমার বা আশেপাশের কারোও দুর্ঘটনার কারণ না হয় সেজন্য নিজে সতর্ক থাকবে এবং সবাইকে সচেতন ও সতর্ক রাখার চেষ্টা করবে।