/
/
মাথায় গুলি লাগার পরও যেভাবে বেঁচে ফিরেছিল নোবেলজয়ী মালালা
মাথায় গুলি লাগার পরও যেভাবে বেঁচে ফিরেছিল নোবেলজয়ী মালালা
ByMozammel Haque Hridoy
Published১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
১:১০ অপরাহ্ণ
1762172769579
Mozammel Haque Hridoy
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে লাল সবুজ প্রকাশের সাব-এডিটর হিসেবে কর্মরত। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন সিজে ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা, সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও ‘Northify’ এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের বেরোবি প্রতিনিধি ছিলেন।

কনটেন্টটি শেয়ার করো

Copied!

সর্বশেষ

malala

মালালা ইউসুফজাই, এই নামটা যারা একবার শুনেছে, এই নামের পেছনের ঘটনা যারা শুনেছে তারা নিশ্চয়ই ভুলে যাওয়ার কথা নয় এ নামের মানুষটার গল্প। ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর, মাথার মস্তিষ্কে আঘাত হানে বন্দুকধারীর ছোড়া .৪৫ পিস্তলের তিনটি গুলি। কপালের বা দিকের ত্বক ভেদ করে,  মস্তিষ্কে আঘাত করে তা গিয়ে লাগে কাঁধে গিয়ে।
যে মালালা আন্দোলন করেছে নারী অধিকার, নারী শিশুর শিক্ষার অধিকার নিয়ে, সেই মালালাই শিকার হন এমন হামলার। এরপর মালালার জীবন স্বাভাবিকভাবে ফেরার পেছনে কঠোর পরিশ্রম, সঠিক সিদ্ধান্ত ও সঠিক চিকিৎসা রয়েছে।
৯ অক্টোবরের বন্দুকধারীর করা ৩ টি গুলিতে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পর মালালাকে নেয়া হয় পাকিস্তানের পেশোয়ারের একটি হাসপাতালে। এর আগে এ হামলার খবর পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের কাছে পৌঁছালে তিনি দ্রতই সামরিক হেলিকপ্টার পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং পেশোয়ারের সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মূলত এখানে সেনাপ্রধান বুঝতে পেরেছিলেন এ হামলা বাকি অন্যান্য হামলাগুলোর মত নয়। আর তার এই চটজলদি ও ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত মালালার জীবন বাঁচাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল।
হাসপাতালে নেয়ার পর তার চিকিৎসা করেন জুনেইদ খান, খান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, মালালাকে যখন নিয়ে আসা হয় তখনও তার জ্ঞান ছিল, মালালা অস্থির এ উত্তেজিত অবস্থায় ছিল। কিন্তু অবনতি বাড়তে থাকে চার ঘন্টাপর। তিনি জানান, তার মস্তিষ্ক ফুলে উঠে এবং অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন ছিল।
এদিকে জুনেইদকে অনেকটা তরুণ মনে হওয়ায় তার উপর আস্থা পাচ্ছিলো না পরিবার এবং দ্রুতই দুবাইয়ে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর কথা বলা হয়। তবে জুনেইদ খানের কাছে বিকল্প না থাকায় দ্রুত তাকে ও তার দলসহ অস্ত্রপচার করতে হয়। মধ্যরাতে শুরু হয় ক্রানিওটমি, চিকিৎসকরস খুলির একটা অংশ অপসারণ করে এবং মস্তিষ্কের রক্তজমাট পরিস্কার করে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখে।
এ নিয়ে এবিসি নিউজে ইংল্যান্ডের ড. রেইনল্ডস জানায়, এই প্রথম অস্ত্রপচারটিই আসলে মালালার জীবন বাঁচায়। পুরো পৃথিবী যখন তার দিকে তাকিয়ে জুনেইদ তখন সফল এবং সঠিক সময়ে অস্ত্রপচারটি করেছিল, জুনেইদ একজন নায়ক।’’
প্রথমের চিকিৎসার পর মালালার টিউব ইনফেকশন হওয়ায় রক্ত ক্লটিং না হওয়ায় তার লাংস ও কিডনি অকার্যকর হওয়া শুরু করে। এরপরই ড. রেইনল্ডস ও কায়ানি তাকে চিকিৎসা দেন।
কায়ানি বলেন, আজ মালালা বেঁচে আছে তার কৃতিত্ব শুধু দুজনের। একজন সেই সার্জন(জুনেইদ খান) এবং অন্যজন হলেন সেনাপ্রধান।’’

২০১২ সালের সেই অবিস্মরণীয় ঘটনায় মালালার জীবন ফিরে এসেছিল সঠিক সিদ্ধান্তের কারণেই। সেনাপ্রধান, চিকিৎসক থেকে সবাই মিলে যে ভূমিকা রেখেছে তার ফলস্বরূপই আজও নারী শিক্ষার দূত হয়ে বেঁচে আছে মালালা।

১৫ বছর বয়সী সেই কিশোরী শেষ পর্যন্ত বেঁচে গিয়ে গড়ে যান ইতিহাস। হয়ে যান নোবেলজয়ী এক কিশোরী, যে বনে যান শিক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক দূত। যার সাহসী পদক্ষেপে বদলে যায় পাকিস্তানসহ নানা দেশের নারী শিক্ষার হার। যে জীবনের আশা হয়তো করেছিলেন খুব কম মানুষই সেই জীবনই ফিরে পেয়েছিলো মালালা ইউসুফজাই। এ নিয়েও মালালা এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলো, আমি অনুভব করি এটাই নতুন জীবন। আমি মনে করি মৃত্যু আমাকে মারতে চায়নি এবং সৃষ্টিকর্তা আমার সাথে ছিল।’